জুমআ মুসলমানদের বিশেষ ইবাদতের দিন। এ দিন নামাজের প্রস্তুতিতে অনেক কাজই উত্তম। এ দিনের নাামাজ মুমিন মুসলমানের জন্য ফরজ। এ ফরজ নামাজ আদায় করতে যাওয়ার আগে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রাপ্ত বয়সের সবার জন্য একটি কাজকে আবশ্যক বলেছেন। তাহলো জুমআর দিন গোসল করে মসজিদে যাওয়া। এ সম্পর্কে হাদিসের একাধিক বর্ণনা পাওয়া যায়। তাহলো-
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের মধ্যে কেউ জুমুআর নামাজে আসলে সে যেন গোসল করে।’ (বুখারি)
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে আরও বর্ণিত আছে, ‘ওমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু জুমুআর দিন দাঁড়িয়ে খুতবা দিচ্ছিলেন। এমন সময় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রথম যুগের একজন মুহাজির সাহাবি (মসজিদে) আসলেন। ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁকে ডেকে বললেন, এখন সময় কত? তিনি বললেন, আমি ব্যস্ত ছিলাম, তাই ঘরে ফিরে আসতে পারিনি। এমন সময় আজান শুনে শুধু অজু করে নিলাম। ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, কেবল অজুই? অথচ আপনি জানেন যে, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (জুমআর নামাজ পড়তে আসতে) গোসলের নির্দেশ দিতেন।’ (বুখারি)
হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, জুমুআর দিনে প্রত্যেক সাবালক তথা প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য গোসল করা ওয়াজিব বা আবশ্যক।’ (বুখারি)
জুমআর নামাজ মুমিন মুসলমানের জন্য ফরজ ইবাদত। এ দিন ইমামের খুতবা শোনা যেমন জরুরি তেমনি ইমামের পেছনে দুই রাকাআত জামাআতে নামাজ পড়তে দ্রুত মসজিদে উপস্থিত হওয়াকেও ফরজ করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলার ঘোষণাও এমনই। তিনি বলেন-
হে ঈমানদারগণ! জুমআর দিনে যখন নামাজের আজান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে (মসজিদের দিকে) দ্রুত ধাবিত হও আর বেচাকেনা (যার যার হাতের কাজ) বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ।’ (সুরা জুমআ : আয়াত ৯)
আল্লাহ তাআলা এ আয়াতে যার যার হাতের কাজ শেষ না করেই আজান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুধু মসজিদের দিকে ইবাদতের জন্য আসার নির্দেশ দিয়েই শেষ করেননি। বরং নামাজের পর করণীয় উল্লেখ করে তা থেকে অব্যাহতিও দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘অতপর নামাজ শেষ হলে তোমরা আল্লাহর জমিনে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ কর ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সুরা জুমআ : আয়াত ১০)
অর্থাৎ আজান শোনার সঙ্গে সঙ্গে যারা হাতের কাজ রেখে নামাজের প্রস্তুতি নিয়ে মসজিদে চলে এসেছেন; তাদের জন্য নামাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যার যার কাজে ফিরে যাওয়ার জন্য রিজিকের অনুসন্ধান করার জন্যও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সুতরাং নামাজের অজুহাতে দিনভর মসজিদে বসে থাকারও কোনো সুযোগ নেই। হালাল রিজিকের অনুসন্ধান এবং প্রয়োজনীয় কাজে জমিনে বের হয়ে যাওয়া মহান রবের নির্দেশ।
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, জুমআর নামাজ পড়তে যাওয়ার আগে গোসল করে নেয়া। সপ্তাহিক ইবাদতের বিশেষ দিনে কুরআনের নির্দেশনা অনুযায়ী মসজিদে যাওয়ার আগে হাদিসের উপর আমল করতে প্রাপ্ত বয়স্ক সবার জন্য গোসল করা জরুরি।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জুমআর দিন গোসল করার তাওফিক দান করুন। জুমআর দিনের অন্যান্য আমলগুলো যথাযথ আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-